সোমবার, ২৭ জুন, ২০১১

কবিরা গুনাহ বা মহা পাপ



"إن تجتنبو كبائر ما تنهون عنه نكفر عنكم سيئاتكم و يدخلكم مدخلا كريما"(النساء-31)
কুরানে কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,তোমরা যদি সেই মহা পাপ সমূহ থেকে বিরত হও যা হতে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে,তা হলেই আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবো এবং তোমাদের সন্মানপ্রদ গন্তব্যস্থানে প্রবিষ্ট করবো।(নিসা-৩১)
বর্ণীত আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা নিজ দয়ায় এবং নিজ দায়িত্বে ঐব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জামিন হয়েছেন যে ব্যক্তি কবিরা গুনাহ সমূহ থেকে নিজেকে মুক্ত রেখেছে।কেননা সগিরা গুনাহগুলো জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রমজানের রোজা ইত্যাদী দ্বারা মাফ হয়ে যায়।হাদীস শরীফে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং এক জুমা থেকে অন্য জুমা ও এক রমজান থেকে অন্য রমজান-মধ্যবর্তি সময়ের সগিরা গুনাহ সমূহের জন্য কাফফারা স্বরূপ,যদি বান্দা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।(মুসলিম)অর্থাৎ বান্দা যদি নিজেকে কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখে,তবে এক নামাজ থেকে দ্বিতীয় নামাজের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কোন সগিরা হয়ে থাকলে তা দ্বিতীয় নামাজ আদায়ের দ্বারাই মাফ হয়ে যাবে।এমনিভাবে জুমা ও রমজানের দ্বারাও তার মধ্যবর্তি গুনাহ মাফ হবে।
এ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাথে আরো একটি বিষয় দ্রষ্টব্য যে উলামায়ে কিরামের ভাষ্যানুযায়ি কবিরা গুনাহ যেমন তাওবা ও ইস্তেগফারের পর কবিরা গুনাহ থাকেনা অর্থাৎ মাফ হয়ে যায় তেমনিভাবে সগিরা গুনাহ ও বার বার করার দ্বারা সগিরা গুনাহ থাকেনা, তা কবিরা গুনাহে রূপান্তরীত হয়ে যায়।সুতরাং কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে প্রথমত কবিরা গুনাহকে জানতে হবে এবং সেগুলো চিনতে হবে।কেননা না চিনলে তা থেকে নিজেকে বাঁচাবো কিভাবে।এ প্রসংগেই হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাঃ বলেন,মানুষ রাসূল সাঃ কে ভাল কাজের ব্যপারে প্রশ্ন করতো,অথচ আমি মন্দ কাজের ব্যপারে জেনে নিতাম,এ ভয়ে যে খারাপ যেন আমাকে না পেয়ে বসে।
কবিরা গুনাহের পরিচয়
অনেকেই মনে করে থাকেন যে কবিরা গুনাহ শুধুমাত্র সাতটি যা হাদীসে কাবায়েরে(কবিরা গুনাহ সম্পর্কিত হাদীস)উল্লেখ আছে।কিন্তু এ ধারণাটি সঠিক নয়।কেননা এ সাতটি কাজ কবিরা গুনাহ ঠিকই,কিন্তু এ হাদীসের মধ্যে কবিরা গুনাহ কে এ সাতটির মধ্যে সিমাবদ্ধ করা হয়নি।অর্থাৎ এ হাদীসে রাসূল সাঃ এসাতটির মধ্যে কবিরা গুনাহকে সিমাবদ্ধ করেননি,সাতটি ধ্বংসাত্মক কবিরা গুনাহের বর্ণনা দিয়েছেন মাত্র।এ প্রসংগেই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন,কবিরা গুনাহ গণনা করলে সত্তরটি পর্যন্ত হয়।আর এসাতটি ঐ সত্তরটিরই অংশ।(বর্ণনায়-ইমাম ত্বাবারী)আল্লামা শামছুদ্দীন যাহবী রাঃ বলেন,হাদীসে কাবায়ের এর সাতটি গুনাহের মধ্যে কবিরা গুনাহের সিমাবদ্ধতা নেই।শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাঃ ও অন্যান্য উলামায়ে কিরাম বলেন,"কবিরা গুনাহ হল প্রত্যেক ঐ গুনাহ যার জন্য দুনিয়াতে শাস্তির বিধান রয়েছে অথবা আখিরাতে শাস্তির ধমকি(হুসিয়ারি)দেয়া হয়েছে"। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাঃ একটু বাড়িয়ে এটাও বলেছেন,যেগুনাহের জন্য ঈমান চলে যাওয়ার ধমকি এসেছে কিংবা লানত(বদ দোয়া)ইত্যাদী করা হয়েছে তাও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত।আর এ কবিরা গুনাহকে উলামায়ে কিরাম গণনা করে সত্তর বা ততধিক পেয়েছেন।
কবিরা গুনাহের বর্ণনা  
নিম্নে যে কবিরা গুনাহ গুলোর বর্ণনা পেশ করছি সে গুলো কবিরা গুনাহ হওয়ার পক্ষে কুরান ও হাদীসে একাধিক প্রমান রয়েছে।এখানে এ সংক্ষিপ্ত পরিসরে তা উল্লেখ করা সম্ভব নয়।
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন