গল্পটি বলার পূর্বে মৃত্যু সম্পর্কে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি।মৃত্যু আমাদের জীবনের একটি চিরন্তন সত্য অধ্যায়।যা কেউই অস্বিকার করতে পারবেনা।যার সময় যখন নির্ধারিত ঠিক তখনি তাকে যেতে হবে এমায়াময় পৃথিবী ছেড়ে।একটুও আগপিছ হবেনা সেই নির্ধারিত সময়ে।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছেঃ-ولكل امة اجل فاذا جاء اجلهم لا يستأخرون ساعة ولايستقدمون প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে।সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় উপস্থিত হবে তখন তা এক মুহূর্তকালও আগে এবং পরে হবেনা।(আরাফ-৩৪)
মৃত্যুর স্মরণ ও তার প্রস্তুতি
রাসূল সাঃ সাহাবাদেরকে সবসময় মৃত্যুকে স্মরণ করা ও নেক আমল দ্বারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকার ব্যপারে উৎসাহ দিতেন।এবং এটাকে ভাল ও উত্তম দিক হিসেবে গণ্য করতেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বলেনঃ-আনসারদের মধ্যে এক ব্যক্তি রাসূল সাঃকে প্রশ্ন করলো ইয়া রাসূলাল্লাহ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বিচক্ষণ ও গোছালো মানুষ কে?
উত্তরে তিনি বললেনঃ-সে ই যে মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করে এবং যার মৃত্যুর জন্য অধিক প্রস্তুতি রয়েছে।(ত্বাবরানী)
অন্য হাদিসে রাসূল সাঃ বলেছেনঃ-তোমরা মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ কর(ত্বাবরানী)
মৃত্যুর আকাংখা নিষিদ্ধ
আনাস রাঃ থেকে বর্ণীত রাসূল সাঃ বলেনঃ-তোমরা কোন রোগ বা বিপদে পড়ে মৃত্যুর আকাংখা করোনা।যদি একান্তই আল্লাহর কাছে মৃত্যুর আকাংখা করতেই হয় তবে এভাবে বল, হে আল্লাহ যতদিন হায়াত আমার জন্য মঙ্গলজনক হয় ততদিন আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন।যখন আমার জন্য মৃত্যু মঙ্গলজনক হবে তখন আমায় মৃত্যু দান করুন।(তিরমিযী,আবূদাউদ)
মুল গল্প
প্রাচীনমানুষের গল্পসম্ভার থেকে সংকলিতঃ-
গল্প ১-এক লোক মৃত্যুদূত আজরাইল আঃ এর বন্দু ছিল।একদিন মৃত্যুদূত তার সাথে সাক্ষাত করতে এলে সে প্রশ্ন করল আপনি কি আমার সাক্ষাতে এসেছেন না প্রাণবধে এসেছেন?
উত্তরে মৃত্যুদূত বললো না আমি আজ তোমার সাক্ষাতেই এসেছি।তখন লোকটি বললো আমি আমার বন্দুত্বের খাতিরে আপনার নিকট একটি আবেদন করছি।আমার হায়াত যখন শেষ হবে,
এবং আপনি যখন আমার প্রাণ নিতে আসবেন দয়া করে তার আগে আমার নিকট একটা দূত পাঠাবেন।
আজরাইল আঃ বললেন তোমার ইচ্ছা পূরণ হবে।অনেকদিন পর একদিন মৃত্যদূত তার নিকট এলে সে জিজ্ঞেস করল আপনি নিশ্চয় সাক্ষাতে এসেছেন?
মৃত্যুদূত বললো না আমি আজ সাক্ষাতে নয় বরং তোমার প্রাণ নিতে এসেছি।তখন লোকটি বললো আপনিতো আমাকে কথা দিয়েছিলেন আপনি মৃত্যুদূত হয়ে আসার পূর্বে আমাকে কোন দূত পাঠিয়ে জানাবেন।মৃত্যুদূত বললো তাতো এসেছে তোমার নিকটে।তুমি আগে স্থির হয়ে হাটতে এখন কুজো হয়ে হাটছ।তোমার চুল আগে কালো ছিল এখন হয়েছে সাদা।তোমার কন্ঠস্বর আগে স্পষ্ট ছিলো এখন তুমি ভাঙ্গা স্বরে কথা বলছ।তুমি ইতিপূর্বে কেমন শক্তিশালী তাগড়া যুবক ছিলে এখন হয়েছ দূর্বল বৃদ্ধ।আগে কেমন প্রখর দৃষ্টি শক্তি ছিল তোমার আর এখন কেমন ঝাপসা দেখ তুমি।তুমি আমার নিকট একটি দূত চেয়েছিলে,অথচ কতগুলো দূত এসেছে তোমার নিকট।এর পরও তুমি আমায় দুষছ?!!!
গল্প ২-আল্লাহ তাআলা সূরায়ে লোক্বমানের শেষ আয়াতে ইরশাদ করেনঃ-কেউ জানেনা তার মৃত্যুর স্থান, কোথায় সে মৃত্যুবরণ করবে।
মৃত্যুদুত ছিল নবী সুলাইমান আঃ এর বন্দু।একদিন মৃত্যুদুত সুলাইমান আঃ এর সাথে দেখা করতে গিয়ে উনার দরবারে একলোককে দেখে আশ্চর্য্য হয়ে ঐলোকের দিকে ভাল করে তাকাতে লাগলেন।এতে লোকটি বেশ ঘাবড়ে গেল। ঐলোকটি সুলাইমান আঃ এর সাথে সাক্ষাত করতে এসেছিল অনেক দূর থেকে।যাহোক মৃত্যুদূত যখন দরবার ছেড়ে চলে গেল লোকটি সুলাইমান আঃ কে বললো জনাব আমি অনুমতি চাইছি। আপনার এখানে আমার খুব ভয় করছে।আমি আমার এলাকায় চলে যাচ্ছি।লোকটি চলে গেল।পরে যখন মৃত্যুদূত আবার সুলাইমান আঃ এর দরবারে এলেন, উনি জানতে চাইলেন ঐদিনের ঘটনা সম্পর্কে।তখন মৃত্যদূত সুলাইমান আঃকে জানালেন ঐলোকটার মৃত্যুবার্তা পৌছে গিয়েছিলো আমার নিকট।তার মৃত্যস্থান তার নিজ এলাকা।আমি তাকে আপনার দরবারে দেখে আশ্চর্য্য হয়েছি যে সে এখানে কেন? কখন যাবে তার মৃত্যুস্থানে।তাই তার দিকে ওভাবে তাকিয়েছিলাম।
মৃত্যুদূতের একটি চাহনি তাকে তার মৃত্যুস্থানে রওনা করে দিল।যার মৃত্যু যেথা সেখানেই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে।সুবহানাল্লাহ!!!
একটি সন্দেহ ও তার সমাধান
কারো মনে প্রশ্ন আসতে পারে কুরান হাদিসে নাই এমন ঘটনাকে কুরানের ব্যাখ্যা স্বরূপ বা ইসলামী লেবাস পরিয়ে এভাবে বর্ণনা ঠিক কি না?
উত্তরঃ-এসব কাহিনীকে(ইস্রাইলী রিওয়ায়াত)বলা হয়।এব্যপারে রাসূল সাঃ আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন হাদিসের মধ্যে।
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা: থেকে বর্ণীত রাসূল সা: বলেছেন-তোমরা আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও পৌঁছে দাও। আর বনী ইসরাইল থেকে বর্ণনা কর, কোন সমস্যা নাই। আর যে আমার উপর ইচ্ছাকৃত মিথ্যারোপ করল সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নাম বানিয়ে নিল।(বুখারী-৩২৭৪)
তবে ইসলামিক স্কলারগণ এর জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।যেমন কাহিনী কুরান হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়া,জ্ঞান ও বিবেক বুজতে অক্ষম এমন অকল্পনীয় আহামরি কিছু না হওয়া ইত্যাদী।
আল্লাহ আমাদের সকলকে মৃত্যুর জন্য সদা প্রস্তুত থাকার তৌফীক্ব দিন।আমীন।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছেঃ-ولكل امة اجل فاذا جاء اجلهم لا يستأخرون ساعة ولايستقدمون প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে।সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় উপস্থিত হবে তখন তা এক মুহূর্তকালও আগে এবং পরে হবেনা।(আরাফ-৩৪)
মৃত্যুর স্মরণ ও তার প্রস্তুতি
রাসূল সাঃ সাহাবাদেরকে সবসময় মৃত্যুকে স্মরণ করা ও নেক আমল দ্বারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকার ব্যপারে উৎসাহ দিতেন।এবং এটাকে ভাল ও উত্তম দিক হিসেবে গণ্য করতেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বলেনঃ-আনসারদের মধ্যে এক ব্যক্তি রাসূল সাঃকে প্রশ্ন করলো ইয়া রাসূলাল্লাহ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বিচক্ষণ ও গোছালো মানুষ কে?
উত্তরে তিনি বললেনঃ-সে ই যে মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করে এবং যার মৃত্যুর জন্য অধিক প্রস্তুতি রয়েছে।(ত্বাবরানী)
অন্য হাদিসে রাসূল সাঃ বলেছেনঃ-তোমরা মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ কর(ত্বাবরানী)
মৃত্যুর আকাংখা নিষিদ্ধ
আনাস রাঃ থেকে বর্ণীত রাসূল সাঃ বলেনঃ-তোমরা কোন রোগ বা বিপদে পড়ে মৃত্যুর আকাংখা করোনা।যদি একান্তই আল্লাহর কাছে মৃত্যুর আকাংখা করতেই হয় তবে এভাবে বল, হে আল্লাহ যতদিন হায়াত আমার জন্য মঙ্গলজনক হয় ততদিন আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন।যখন আমার জন্য মৃত্যু মঙ্গলজনক হবে তখন আমায় মৃত্যু দান করুন।(তিরমিযী,আবূদাউদ)
মুল গল্প
প্রাচীনমানুষের গল্পসম্ভার থেকে সংকলিতঃ-
গল্প ১-এক লোক মৃত্যুদূত আজরাইল আঃ এর বন্দু ছিল।একদিন মৃত্যুদূত তার সাথে সাক্ষাত করতে এলে সে প্রশ্ন করল আপনি কি আমার সাক্ষাতে এসেছেন না প্রাণবধে এসেছেন?
উত্তরে মৃত্যুদূত বললো না আমি আজ তোমার সাক্ষাতেই এসেছি।তখন লোকটি বললো আমি আমার বন্দুত্বের খাতিরে আপনার নিকট একটি আবেদন করছি।আমার হায়াত যখন শেষ হবে,
এবং আপনি যখন আমার প্রাণ নিতে আসবেন দয়া করে তার আগে আমার নিকট একটা দূত পাঠাবেন।
আজরাইল আঃ বললেন তোমার ইচ্ছা পূরণ হবে।অনেকদিন পর একদিন মৃত্যদূত তার নিকট এলে সে জিজ্ঞেস করল আপনি নিশ্চয় সাক্ষাতে এসেছেন?
মৃত্যুদূত বললো না আমি আজ সাক্ষাতে নয় বরং তোমার প্রাণ নিতে এসেছি।তখন লোকটি বললো আপনিতো আমাকে কথা দিয়েছিলেন আপনি মৃত্যুদূত হয়ে আসার পূর্বে আমাকে কোন দূত পাঠিয়ে জানাবেন।মৃত্যুদূত বললো তাতো এসেছে তোমার নিকটে।তুমি আগে স্থির হয়ে হাটতে এখন কুজো হয়ে হাটছ।তোমার চুল আগে কালো ছিল এখন হয়েছে সাদা।তোমার কন্ঠস্বর আগে স্পষ্ট ছিলো এখন তুমি ভাঙ্গা স্বরে কথা বলছ।তুমি ইতিপূর্বে কেমন শক্তিশালী তাগড়া যুবক ছিলে এখন হয়েছ দূর্বল বৃদ্ধ।আগে কেমন প্রখর দৃষ্টি শক্তি ছিল তোমার আর এখন কেমন ঝাপসা দেখ তুমি।তুমি আমার নিকট একটি দূত চেয়েছিলে,অথচ কতগুলো দূত এসেছে তোমার নিকট।এর পরও তুমি আমায় দুষছ?!!!
গল্প ২-আল্লাহ তাআলা সূরায়ে লোক্বমানের শেষ আয়াতে ইরশাদ করেনঃ-কেউ জানেনা তার মৃত্যুর স্থান, কোথায় সে মৃত্যুবরণ করবে।
মৃত্যুদুত ছিল নবী সুলাইমান আঃ এর বন্দু।একদিন মৃত্যুদুত সুলাইমান আঃ এর সাথে দেখা করতে গিয়ে উনার দরবারে একলোককে দেখে আশ্চর্য্য হয়ে ঐলোকের দিকে ভাল করে তাকাতে লাগলেন।এতে লোকটি বেশ ঘাবড়ে গেল। ঐলোকটি সুলাইমান আঃ এর সাথে সাক্ষাত করতে এসেছিল অনেক দূর থেকে।যাহোক মৃত্যুদূত যখন দরবার ছেড়ে চলে গেল লোকটি সুলাইমান আঃ কে বললো জনাব আমি অনুমতি চাইছি। আপনার এখানে আমার খুব ভয় করছে।আমি আমার এলাকায় চলে যাচ্ছি।লোকটি চলে গেল।পরে যখন মৃত্যুদূত আবার সুলাইমান আঃ এর দরবারে এলেন, উনি জানতে চাইলেন ঐদিনের ঘটনা সম্পর্কে।তখন মৃত্যদূত সুলাইমান আঃকে জানালেন ঐলোকটার মৃত্যুবার্তা পৌছে গিয়েছিলো আমার নিকট।তার মৃত্যস্থান তার নিজ এলাকা।আমি তাকে আপনার দরবারে দেখে আশ্চর্য্য হয়েছি যে সে এখানে কেন? কখন যাবে তার মৃত্যুস্থানে।তাই তার দিকে ওভাবে তাকিয়েছিলাম।
মৃত্যুদূতের একটি চাহনি তাকে তার মৃত্যুস্থানে রওনা করে দিল।যার মৃত্যু যেথা সেখানেই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে।সুবহানাল্লাহ!!!
একটি সন্দেহ ও তার সমাধান
কারো মনে প্রশ্ন আসতে পারে কুরান হাদিসে নাই এমন ঘটনাকে কুরানের ব্যাখ্যা স্বরূপ বা ইসলামী লেবাস পরিয়ে এভাবে বর্ণনা ঠিক কি না?
উত্তরঃ-এসব কাহিনীকে(ইস্রাইলী রিওয়ায়াত)বলা হয়।এব্যপারে রাসূল সাঃ আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন হাদিসের মধ্যে।
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা: থেকে বর্ণীত রাসূল সা: বলেছেন-তোমরা আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও পৌঁছে দাও। আর বনী ইসরাইল থেকে বর্ণনা কর, কোন সমস্যা নাই। আর যে আমার উপর ইচ্ছাকৃত মিথ্যারোপ করল সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নাম বানিয়ে নিল।(বুখারী-৩২৭৪)
তবে ইসলামিক স্কলারগণ এর জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।যেমন কাহিনী কুরান হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়া,জ্ঞান ও বিবেক বুজতে অক্ষম এমন অকল্পনীয় আহামরি কিছু না হওয়া ইত্যাদী।
আল্লাহ আমাদের সকলকে মৃত্যুর জন্য সদা প্রস্তুত থাকার তৌফীক্ব দিন।আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন